লজ্জা নাকি ভয়? পাছে লোকে কি কয় ,যদি হতে চান আগামীর উদ্যোক্তা ছাড়ুন পিছে কে কি বলে তার চিন্তা….

লজ্জা নাকি ভয়? পাছে লোকে কি কয়…


যদি হতে চান আগামীর উদ্যোক্তা ছাড়ুন পিছে কে কি বলে তার চিন্তা….
শুরু করব একটা ছোট গল্প দিয়ে। মনোযোগের কেন্দ্র এক বিন্দুতে আনার জন্য আপনাদের সকলকে আমন্ত্রন জানাচ্ছি আমি মাসুদুর রহমান মাসুদ।

পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্যেশ্যে এক বাবা আর তার তের বছরের ছেলে একটি ছোট ঘোড়ার পিঠে চড়ে রওনা দিল মক্কার উদ্যেশ্যে। কিছু দূর যেতে না যেতেই রাস্তার পাশের লোকজন বলা শুরু করল কি নির্দয় বাবা ছেলে দুজনেই। এইটুকু ছোট্ট ঘোড়ার পিঠে চড়ে দুই জন ঘোড়াটাকে কষ্ট দিচ্ছে।

লোকেদের কথা শুনে বাবা তার ছেলেকে বলল তুমি ছোট মানুষ তুমি ঘোড়ার পিঠে চড়ে যাও। আমি বরং হেঁটে চলি। ঘোড়া থেকে নেমে হেঁটে পথ চলা শুরু হল। কিছু দূর যেতে না যেতেই এবার রাস্তার পাশের লোকেরা বলা শুরু করল কি বেয়াদব ছেলে তার বাবাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় ঘোড়ার পিঠে না উঁঠিয়ে। ছেলেতো নিজেই হেঁটে যেতে পারত তার বাবাকে ঘোড়ায় চড়িয়ে।

সামনে একটু এগিয়ে ছেলে তার বাবাকে বলল বাবা আপনার তো বয়স হয়েছে অনেক হেঁটেছেন এবার আপনি ঘোড়ার পিঠে চড়ুন আমি আমি হেঁটে যাব। কথা শেষ করেই তার বাবাকে ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে আগাতে লাগল সামনের দিকে। খুব বেশী দুর যেতে না যেতেই লোকেরা বলতে শুরু করল এ কেমন বাবা? এইটুকু মাসুম বাচ্চাকে হাঁটিয়ে নিয়ে যায় নিজে ঘোড়ার পিঠে চড়ে।

একটুপর বাবা নেমে এসে ছেলেকে বলল বাবা আমাদের ঘোড়াটা তো বেশ ছোট, আমাদের দুজনের ভার নিতে কষ্ট হয় ওর, তারচেয়ে বরং চল আমরা দুজনে হেঁটে সামনের বাকি পথটুকু পড়ি দেই। এবার ঘোড়ার দড়ি হাতে নিয়ে বাবা আর ছেলে চলতে লাগল। বেশী দূর যেতে হল না। লোকেরা বলতে শুরু করল এরা দুই জন কত বড় গাধা। ঘোড়া থাকতে ঘোড়ার পিঠে না চড়ে দড়ি হাতে নিয়ে হেঁটে যায়। গল্পটির ইতি আমি এখানেই টানছি।

এবার আপনার পালা। গল্পটির দিকে খেয়াল করুন বাবা-ছেলে দুজনে মিলে লোকেদের মুখের কথা এড়িয়ে চলতে এমন কোন প্রচেষ্টা নাই যা করেনি। কিন্তু কতটুকু সফল হয়েছে তার বিচার আপনিই করুন। দৃষ্টি ফেরান আসল কথায় ফিরব এবার। আপনি যা কিছুই করতে চান না কেন লোকেরা তার সমালোচনা করবেই। সেটা হোক ভাল কিংবা মন্দ। হোক ছোট কাজ কিংবা বড়। লোকের মুখের কথা লোকের মুখেই রয়ে যাবে। আপনি জীবনে বড় হতে পারলে এ সমস্ত লোকেরাই আবার আপনাকে বাহবা দিবে।

যারা ঢাকার ভেতরই থাকেন তাদের বলব একটা বার হলেও ঘুরে আসুন উত্তরার তালতলা এলাকা থেকে। রাস্তার পাশে গড়ে উঠেছে দেশী-বিদেশী খাবারের সমারোহ নিয়ে প্রায় শতাধিক দোকান। যেগুলোর বেশীরভাগই তুরুনদের। এখানে নিঃসংকোচে কাজ করে চলেছে তরুন যুবকরা। যারা লাজ লজ্জাকে পেছনে ফেলে গুরুত্ব দিয়ে চলেছে সাফল্যের খোঁজে। নিজেরাতো সাবলম্বী হয়েই আছে সেই সাথে নতুনদের জন্য তো দৃষ্টান্ত তারা। এদের কারোর ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড খারাপ নয়। তাহলে তারা যদি পারে আপনি কেন পারবেন না?

আনোয়ার গ্রুপ অব ইন্ডাষ্ট্রিজ এর মালিক শিল্পপতি আনোয়ার হোসেনের পিছনের জীবনের কথা তার নিজের দোকানের মাল নিজের কাধেই টেনেছেন। কাপড়ের বড় বড় গাইট নিজের কাধে বয়ে নিয়ে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে গিয়ে বিক্রি করেছেন। অথচ তার বাবার ছিল প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা। ভেবে দেখেুন আপনি কি তার চেয়েও বড় হয়েছেন যে আপনার এত আত্মসম্মানে বাধে? আপনি কি হয়েছেন যে লেখাপড়া শিখেছেন বলে ছোট কাজ করতে পারছেন না? লেখাপড়া শিখে ভাবছেন বড় হয়েছেন?

কিন্তু না। আপনার ভেতর জন্ম দিয়েছেন দম্ভ আর অহংকারের। লেখাপড়ার মুল উদ্দেশ্য থেকে আপনি বিচ্যুত হয়েছেন। আপনি আত্মউন্নয়নের বদলে নিজেকে শিক্ষিতের দোহাই দিয়ে আত্মঅহংকারে ডুবেছেন। আর যার ফল স্বরুপ আপনি কাধে বয়ে বেরাচ্ছেন বেকারত্বের বোঝা। হতে পারছেন না উদ্যোক্তা। বেরিয়ে আসুন মনের চোখ খুলে।

আত্মবিশ্বাসী হোন নিজের প্রতি। কাজকে ছোট করে না দেখে লেগে পড়ুন যে কোন একটা কাজে। আজ শুরু করবেন আর পাঁচ বছর পরে পেছনে তাকিয়ে দেখবেন যারা আপনার পিছে কথা বলত তারাই আপনাকে বাহবা দিচ্ছে। আপনার সফলতার পথটি ধরে এগিয়ে আসছে অনেকেই। আর আপনি সেই লজ্জা আর ভয়কে জয় করে তাদের পথের নির্দেশনায় থাকবেন অগ্রপথিক হয়ে।

বিদায় নিব। তার আগে বলব আরও একটি কথা। আমার যুদ্ধ বেকারত্বের সাথে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার পাশাপাশি সফল উদ্যোক্তা গড়ে তোলা আমার লক্ষ। আপনাদের নিয়ে সেই যুদ্ধ জয় করব একসময়। আর এজন্য শেয়ার করুন লিখা। আপনাদের মতামত জনান কমেন্টস করে। আর আপনার বন্ধুদের উনভাইট করুন আমাদের পেইজে। শুভকামনা জানিয়ে ধন্যবাদ সকলকে…….

1 comment:

  1. আমি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি ভাই কোথা থেকে শুরু করবো নিজেই বুঝতেছিনা

    ReplyDelete

Powered by Blogger.